সন্তান প্রতিপালন -২

 কিভাবে মানুষ ফিতরাত থেকে বিচ্যুত হলো?

কিভাবে বিশ্বজুড়ে এতো মানুষ ইসলাম বাদ দিয়ে অন্যান্য ধর্মাবলম্বী হয়ে গেলে?

বিশ্বব্যাপী কেন এতো ফিৎনা-ফ্যাসাদ, দুর্নীতি, জুলুম বেড়ে গেলো?

ফিতরাত হচ্ছে মানুষের স্বভাব ধর্ম। এর মাধ্যমে মানুষ সহজাত ভাবে আল্লাহ্কে চিনতে পারে এবং আল্লাহ্‌র অস্তিত্বকে অনুভব করতে পারে।

আর স্মরণ করুণ, যখন আপনার রব আদম-সন্তানের পিঠ থেকে তার বংশধরকে বের করেন এবং তাদের নিজেদের সম্বন্ধে স্বীকারোক্তি গ্রহণ করেন এবং বলেন, ‘আমি কি তোমাদের রব নই?’ তারা বলেছিল, ‘ হ্যাঁ অবশ্যই, আমরা সাক্ষী রইলাম।’ এটা এ জন্যে যে, তোমরা যেন কিয়ামতের দিন না বলো, ‘আমরা তো এ বিষয়ে গাফেল ছিলাম ।‘ (সূরা আল ‘আরাফ: ১৭২)

এমনি ভাবে আমাদের অন্তরে ঈমানের মূল স্থাপিত হয়ে গিয়েছে। মানব শিশু আল্লাহ্‌র উপর ঈমান এবং ইবাদতের সহজাত বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্ম গ্রহণ করে। তারপরও মানুষ এটা থেকে বিচ্যুত হয়, কারন-

আবু হুরাইরাহ্ রাদিয়াল্লাহু আনহু হাদীস বর্ণনা করতেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন যে, “প্রতিটি নবজাতকই জন্ম লাভ করে ফিতরাতের (তাওহীদের) উপর। অতঃপর তার মা-বাপ তাকে ইয়াহূদী বা খ্রিস্টান বা অগ্নিপূজারী রূপে গড়ে তোলে। যেমন, চতুষ্পদ পশু নিখুঁত বাচ্চা জন্ম দেয়। তোমরা কি তাদের মধ্যে কোন কান কাটা দেখতে পাও? (বরং মানুষরাই তার নাক কান কেটে দিয়ে বা ছিদ্র করে তাকে বিকৃত করে থাকে। অনুরূপ ইসলামের ফিতরাতে ভূমিষ্ঠ সন্তানকে মা-বাপ তাদের শিক্ষা-দীক্ষা ও জীবন ধারায় প্রবাহিত করে ভ্রান্ত ধর্মী বানিয়ে ফেলে)” [সহীহ বুখারী: ১৩৫৮]

তাহলে বোঝা গেলো পিতা-মাতা একজন সন্তানের জীবনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে। তারা সন্তানকে বিভিন্ন ধর্মের অনুসারী বানিয়ে দেয় অথবা ভুল পথে পরিচালিত করে। একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, একটি শিশু পিতা-মাতার দেয়া মূল্যবোধ সহকারে বড় হয় এবং তাদের দ্বারাই প্রতিনিয়ত প্রভাবিত হয়। এছাড়া পারিবারিক পরিবেশ, স্কুল-কলেজ, বন্ধু-বান্ধব, মিডিয়া, এগুলোর মাধ্যমেও শিশুর চিন্তা চেতনা, আচার-আচরণে ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তার করে।

কিভাবে আমরা একজন শিশুকে ফিতরাতের উপর অটল রাখতে পারি?

সন্তানের এ পৃথিবীতে আগমনের পূর্বে থেকেই পুরুষদের প্রতি বিবাহ সম্পর্কে ইসলাম নির্দেশ প্রদান করেছে যে –

আবু হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “চারটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে মেয়েদেরকে বিয়ে করা হয়ঃ তার সম্পদ, তার বংশমর্যাদা, তার সৌন্দর্য ও তার দ্বীনদারী। সুতরাং তুমি দ্বীনদারীকেই প্রাধান্য দেবে নতুবা তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে”।

[বুখারী হা/৫০৯০, মুসলিম ১৭/১৫, হাঃ ১৪৬৬, আহমাদ ৯৫২৬]

বিবাহ করার সময় মহিলার রূপ বা সম্পদই যেন সবকিছু বলে বিবেচিত না হয় বরং এর যে কোন একটির সাথে ধর্মপরায়ণতার গুণটি অবশ্যই যুক্ত হতে হবে। মহিলা যেন ভদ্র পরিবারের সদস্য হন। কারণ তার সন্তানেরা তার চরিত্র, বৈশিষ্ট্য ও আচরণ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকে।

নায়লা নুযহাত